Posts

মালদ্বীপ কেন ভারত বিরোধী হয়ে উঠল ?

Why did Maldives become anti-India?

সার্কভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ একমাত্র দেশ, গত শীর্ষ সম্মেলনে যারা ভারতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানের সম্মেলন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়নি। সে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সেনাসূত্র। দেশটির অর্থনীতিতে চীনা আধিপত্য নিয়ে বরাবরই শঙ্কিত ভারত। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রটিতে বর্তমান ইয়ামিন সরকারের সময়ে ইসলামী জঙ্গিবাদ বিকশিত হয়েছে বলেও মনে করে দিল্লি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া মালদ্বীপে ভারতের স্বার্থগত ১০টি ক্ষেত্র শনাক্ত করেছে। বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

১. মালদ্বীপ ভারত মহাসাগরের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। প্রায় ১২শ প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রটির অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ নৌরুটের পাশেই। এই রুট দিয়েই ভারত, চীন ও জাপানে নির্ভিঘ্নে জ্বালানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। 

২. প্রায় ১০ বছর আগে জলদস্যুতা প্রতিরোধের নামে আদেন উপসাগরে নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠায় চীন। তারা তখন ভারত সাগরের এই রুটটি ব্যবহার করে। এরপর থেকে মালদ্বীপের গুরুত্ব ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। আর এখন এটা আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। 

৩. এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য ভারতের মালদ্বীপকে প্রয়োজন। এজন্য দেশটির সঙ্গে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারও করেছে ভারত। 

৪. মালদ্বীপে চীনের ব্যাপক অর্থনৈতিক উপস্থিতিও ভারতের উদ্বেগের অন্যতম বড় কারণ। দেশটি এখন চীন থেকে ৭০ শতাংশ সহায়তা পেয়ে থাকে। অনেকেই মনে করেন, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন শ্রীলঙ্কার রাজাপাক্ষের মতো কাজ করেছেন। কিছু ব্যাপারে সেখানে ভারতকে পিছিয়ে আসতে হয়েছিল। তাই দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সেখানে ভারতের জন্য সঠিক সুযোগ নিয়ে এসেছে। 

৫. মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাসিদের দল এমডিপি’র মতো বিরোধী দলগুলোর সমর্থকরা চায় ভারত ইয়ামিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তাই সেখানে হস্তক্ষেপ করলে ভারত জনসমর্থনও আদায় করতে পারবে। 

৬. মালদ্বীপ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন সার্কের অন্যতম সদস্য। তাই এই এলাকায় নেতৃত্ব বজায় রাখার জন্য মালদ্বীপকে পাশে পাওয়া ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মালদ্বীপ একমাত্র দেশ যে উড়িতে হামলার পর পাকিস্তানে সার্ক সম্মেলন বর্জনে ভারতের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। 

৭. ইয়ামিনের অধীনে দ্রুত মৌলবাদের বিকাশ ঘটেছে বলে মনে করে টাইমস অব ইন্ডিয়া। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বলা হয়ে থাকে জনসংখ্যার হার হিসেবে মালদ্বীপ থেকে সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ সিরিয়ায় বিদেশি যোদ্ধা হিসেবে যোগ দিয়েছে। ভারত এমন ইসলামি মৌলবাদের উত্থান ঠেকাতে তেমন কিছুই করতে পারেনি। 

৮. ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে নৃতাত্ত্বিক, ভাষাতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৬৫ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ভারতই প্রথম মালদ্বীপকে স্বীকৃতি দেয়। তারা ১৯৭২ সালে মালেতে দূতাবাস স্থাপন করে। 

৯. মালদ্বীপে প্রায় ২৫ হাজার ভারতীয় নাগরিক বসবাস করেন। তারা সেখানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অভিবাসী। আর মালদ্বীপের পর্যটকদের মধ্যেও প্রতিবছর প্রায় ৬ শতাংশ ভারতীয় নাগরিক থাকেন। 

১০.  মালদ্বীপের নাগরিকদের কাছেও শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন ও ব্যবসায়ের জন্য ভারতই প্রথম পছন্দ। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রতিবছর মালদ্বীপের অনেক নাগরিক শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য দীর্ঘমেয়াদে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করে থাকে।

 

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.